[এক]
মানুষ শুধু উৎসবের পেছনে দৌঁড়ায়। ব্যস্ত ও একঘেঁয়ে জীবনের খোলস ছেড়ে একটু বেরিয়ে আসতে চায় সে। একটু শান্তি আর সুখ লাভের জন্য ছটফট করতে থাকে সবসময়। তাই কোনো নাম-কা-ওয়াস্তে উসিলা পেলেই নেচে ওঠে তার মন। ছুটে যায় সে দিকে। মেতে ওঠে উৎসবে।
কালের কণ্ঠের গতকালের ‘রাজকূট’ টা বাসে বসে পড়ছিলাম। প্রচ্ছদ রচনা “রক্তের অক্ষরে লেখা শহীদের নাম ভেসে গেছে ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে” মনযোগ দিয়ে পড়লাম। কীভাবে শোকের কথা ভুলে গিয়ে শুধু একটু সুখের আশায় মানুষ সহজেই একটি বানিজ্যিক দিনকে গ্রহণ করে উৎসবের দিন হিসেবে -রচনাটি সে কথাই আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেয় আমাদেরকে।
আমাদের অবস্থা তো এখন এমন যে, কোনো উৎসব পালন করতে তার ইতিহাসও ঘেটে দেখি না আমরা। মিডিয়া বলে ভালোবাসা দিবস, ভালোবাসতে শুরু করি আমরা। মিডিয়া বলে এপ্রিল ফুল, ফুল বানাতে ব্যস্ত হয়ে যাই আমরা। মিডিয়া প্রচার করে ঈদে মিলাদুন্নবি, ঈদ পালন করতে শুরু করি আমরা। এলাকার ছেলেরা পটকা ফোটানো শুরু করে। কোরমা-পোলাও আর শিন্নি-সেমাই রান্না হয় ঘরে ঘরে। আশ্চর্য!
আমরা কি মানুষ নই! মানুষ তো ভাবে, চিন্তা করে। তা সম্ভব না হলে কাউকে সে জিজ্ঞাসা করে। জানার স্পৃহা থাকে তার। কেউ বলল আর তা মেনে নিল -মানুষ তো এমন নয়। তাহলে তো চিন্তাশক্তি সমৃদ্ধ মেধা/ব্রেইন তাকে দেয়া হত না। স্রষ্টা আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তা দিতেন না। মানুষের স্বভাব চিন্তা করা। ভাবা। চিন্তাশীলদের স্মরণাপন্ন হওয়া। এগুলো কি আমরা করি?
[দুই]
ঈদে মিলাদুন্নবি নামে ইসলামে কোনো ঈদ নেই। ধর্মের নামে কোনো কিছু প্রচার করতে হলে উপযুক্ত দলিল-প্রমাণ লাগে। ঈদে মিলাদুন্নবির প্রচারকদের কাছে তা নেই। দলিল-প্রমাণ বলতে তারা যা উপস্থাপন করেন, তাকে প্রমাণ তো বলাই যায় না, সাপোর্টার বলতেও লজ্জা হয়।
আর কুরআন-হাদিস ও সাহাবা-তাবেয়ীদের জীবনী থেকে প্রমাণ ছাড়া ধর্মের নামে নতুন কিছু করাকে বলা হয় বেদাত। নবী স. বেদাতের বিরুদ্ধে সবসময় কঠোর ছিলেন। কোনো বক্তব্য শুরু করার সময় তিনি যে ভূমিকা বলতেন, তাতেই বেদাতের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি থাকত। বুখারী রহ. সহ সব হাদিসবেত্তাই সেসব বণর্না উল্লেখ করেছেন।
বেদাতের বিরুদ্ধে এত কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করার কারণ, ধর্মকে তার মূল অবয়বে রক্ষা করা। কেননা বেদাতের সৃষ্টি সবসময়ই সুন্দর অবয়বে হয়ে থাকে। বেদাতকারীদের উদ্দেশ্যও অধিকাংশ সময় সওয়াব লাভ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এভাবে কুরআন-হাদিসে যেসব নেই, সেসব যদি ধর্মের নামে সংযোজন হতে শুরু করে, তাহলে ধর্মের অবয়বই একদিন হারিয়ে হয়ে যাবে।
মানুষ যখন অন্যায় করে, তখন তার ভেতর এ অনুভূতি কাজ করে যে, সে অন্যায় করছে। ফলে একদিন না একদিন সে অনুতপ্ত হয়। ক্ষমা চায় আল্লাহর কাছে। কিন্তু বেদাত করার সময় তার ভেতর এ অনুভূতি কাজ করে যে, সে সওয়াবের কাজ করছে। ফলে দিনের পর দিন তাতে লিপ্ত থাকার পরও সে অনুতপ্ত হয় না। ফলে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগও আসে না তার। এজন্যই বেদাত বড় পাপের চেয়েও ভয়ংকর।
[তিন]
নবী স. এর জন্ম দিবসকেই তারা ঈদে মিলাদুন্নবি বলেন। অথচ এমন কোনো দিবস নবী স. নিজেও পালন করেন নি, তার সাহাবী-তাবেয়ী কেউ পালন করেন নি। নি:সন্দেহে নবীর স. সাহাবীগণ আমাদের চেয়ে নবীর স. প্রতি বেশি ভালোবাসা পোষণ করতেন। এরপরও তাদের এ দিবস পালন না করা এ দিনের কোনো ধর্মীয় অনুমোদন না থাকারই প্রমাণ।
আরবি বছর কবে থেকে গণনা করা হবে -এ নিয়ে যখন ওমর রা. এর উদ্যোগে পরামর্শ সভা ডাকা হয়, তখন কিছু সাহাবী নবী স. এর জন্ম দিবস থেকে বছর গণনা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওমর রা. সহ বড় সাহাবীগণ তা কঠোরভাবে প্রতিহত করেন। পরে হিজরত থেকেই বছর গণনা শুরু হয়।
বলা হয়, পরবর্তীকালে কোনো এক খলিফার সময় এ দিবসটির প্রচলন শুরু হয়। যা আজও কিছু মানুষ লালন করে আসছে।
[চার]
রবিউল আউয়াল মাস আসলেই আমাদের ভেতর নবী-প্রেম জেগে ওঠে। আবেগে তাড়িত হই আমরা। ভালো। কিন্তু আমরা কি আবেগটাকে সঠিক পথে কাজে লাগাতে পারি? কেন, এসব বেদাতে না জড়িয়ে নবীর স. জীবনের উপর আলোচনা-পর্যালোচনা-গবেষণা আর সভা-সেমিনার আয়োজন করলে কি ভালো হত না? নবীর স. জন্মের মাস, আবার তাঁর ইন্তেকালেরও মাস এটা। এ মাসে তাঁর জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
এ মাসে তাঁর সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক দর্শনগুলো নিয়ে সভা-সেমিনার হতে পারে। তাঁর আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরা যেতে পারে। শুধু জন্মের পূর্বাপর গল্পগুলো বললেই কি দায় মিটে যায়? ভালোবাসা কি শুধুই জন্মের সাথে সম্পৃক্ত? জীবন কি এখানে একেবারেই গুরুত্বহীন?
আসুন ভাবি, চিন্তা করি। চিন্তাশীলদের কাছে যাই। আলোচনা করি। নবীর স. জীবন নিয়ে, তাঁর আদর্শ নিয়ে, তাঁর দর্শন নিয়ে।
শেষকথা : যারা ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করেন তাদের অনেকেরই উদ্দেশ্য নবী স. এর ভালোবাসা। কাজেই তাদেরকে দমন করার নামে তাদেরকে কষ্ট দেয়া কাম্য নয় কখনোই। বরং, সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে কাছে টেনে নিতে হবে তাদের। নবী প্রেম তবেই ফুটে উঠবে স্বার্থক ভাবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন।
—
২৭শে ফেব্রুয়ারি ‘১০ / রাত ১২:২৫
eta kono article holo maulana saheb ……. apni to eid ul fitr related akta post diesen . eid er varbatim meaning o mention koresen amra kii happy hote parina rasul (pboh) er jonmodin e . amra normally manuser birth day enormously celebrate kori but jokhon root er dike pirte chai then saitan forbid kore strongly . most of da time uses like u maulanas .we have to be very much conscious specially when we speak about rasul like this sensitive matters. i earnestly request u to study on rasul then comment, hope core message reached to u . wishing u all da best in your journey to preach islamic thoughts and a liability of accurate factors otherwise misconception may arise among aam publics
Assalamu Alaikum. Jazakallah for your comment. Please provide proofs on celebrating the birth of Rasul SM. Please show such act from the Sahabis, who surely loved Rasul SM much more than us. The reason that we see people celebrate birthdays in today’s era doesn’t prove that we should celebrate the birth of Rasul SM.
I hope we’ll be more cautious in saying something about Rasul SM.
Yousuf saheb I am very much pleased after seeing ur so quick response . Whether i am staying far distance from shariah’s evidence due to my academic purposes rather i try to quote some verses from the quran . kama kala tala kull be fadlil lahe wa be rahmati…..to the last. wama arsalnaka illa rahmatallil alamin. If he be the rahmat for us why dont we celebrate his birthday ..man..? allah says another ..wabntagu elaihil wasilah..who the best medium to get allah except rasul? consistently i reach u all da proofs what i have knownand have.
Brother Golam Mostofa, glad to see you in your full name. Actually the ayats you have quoted proves that Rasul sm was sent to us as rahmat, as sign of peace. And that Muslims should be happy with the Rahmat Allah sends.
But these do not AT ALL prove that we should celebrate the birth of Rasul sm. Instead they proves that we should follow his sayings, his deeds more and more. Allah says in another ayah, “Say if you love Allah, follow me, He’ll love you and forgive your sins. (3:31)
There is no way to express love except by following him. If we say that we love our parents, but do not follow their orders (of course in accordance to the Shairah), then we’re surely telling lie.
Allah is telling exactly the same thing in the ayah I mentioned above.
Therefore, there is no use of claiming love for Rasul sm and ignoring his sayings. He never told us to celebrate his birth, nor did his followers – the great Sahabis – celebrate that. Can we claim that our love for Rasul sm is more that that of the Sahabis? Never..
So better we think about it deeply and try to follow Rasul sm. Allah help us. Aameen.