প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম ইউসুফ ভাই।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলোর আমি নিয়মিত পাঠক এবং খুব ভালো লাগে আপনার উপস্থাপনাগুলো। দোয়া করি আল্লাহ যাতে আপনার কলমের ধার আরো অনেকগুণ বাড়িয়ে দেন। যাক ভাইয়া একটা প্রশ্ন আছে, যদি সময় করে উত্তর দেন তাহলে ভালো লাগবে।
আমাদের সাথে আমাদেরই এক নিকট আত্মীয় কুরবানীতে শরীক হন। কিন্তু আমার জানামতে উনারা উপার্জনটা হালাল রাস্তা থেকে নয়। (সে যে বেতন পায় তাতে তার বাসা ভাড়া দেয়াও কঠিন হওয়ার কথা, থাকতো অন্যসব বেপার) এমন অবস্থা যে আমি উনাকে শরীক না করতে চাইলে ও সরাসরি নিষেধ করতে পারছিনা। এমতাবস্থায় আমার কি করনীয় জানালে ভীষণ উপকৃত হব।
দোয়ার দরখাস্ত রেখে বিদায় নিলাম।
আল্লাহ হাফিজ
উত্তর : ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
ইবাদত হলো আল্লাহর কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করার নাম। আর আল্লাহ হলেন বিশ্বজগতের স্রষ্টা। কাজেই ইবাদত হলো স্রষ্টার কাছে মাথা নত করা। আমাদের সাধারণ সেন্সে আমরা যেমন প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করার কথা ভাবলে নিজের সবচেয়ে ভালো আচরণটুকু উপহার দেয়ার কথা ভাবি, তেমনি স্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে নিজেকে সমর্পণের সময়ও নিজের সবচেয়ে ভালো আমলগুলো উপহার দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
মানুষ যে সম্পদ উপার্জন করে তার কিছু হালাল আর কিছু হারাম। সৎ ভাবে চাকুরী বা ব্যবসা করে উপার্জন করলে তা হালাল। আর অন্যায় ভাবে, সুদ বা ঘুষের মাধ্যমে আয় করলে তা হবে হারাম। আর হারাম সম্পদ নিশ্চয় নিকৃষ্ট মানের সম্পদ। এ সম্পদ নিয়ে স্রষ্টার সামনে উপস্থিত হওয়ার সাহসও করা যায় না। তাই জীবনের সব ক্ষেত্রে তো অবশ্যই, ইবাদতের ক্ষেত্রে বিশেষ করে নিজের হালাল সম্পদ ব্যয় করার চেষ্টা করতে হবে।
আপনার বর্ণিত প্রশ্নে আপনি যদি নিশ্চিত বা প্রায় নিশ্চিত ভাবে জেনে থাকেন যে, আপনার শরীক তার অংশটি তার হারাম আয় থেকে ব্যয় করছে, তাহলে কৌশলে তাকে এড়িয়ে যান। কারণ শরীকদের কারো একজনের নিয়ত পরিশুদ্ধ না থাকলে সবার কুরবানীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আপনি তাকে বলতে পারেন যে, এবার অন্যদের সাথে আপনি শরীকানা ঠিক করে ফেলেছেন। অথবা, আপনি আলাদা ভাবে একটি ছাগল, বকরী বা দুম্বা কুরবানী দিতে পারেন। তবে কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিবেন না।
আপনার সে আত্মীয় আপনার অধিনস্ত হলে আপনি যে তাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন, তা তাকে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়েও দিতে পারেন। তাহলে সে আপনার ঘৃণার কারণ বুঝতে পারবে, এবং আল্লাহ সুবুদ্ধি দিলে তার বোধদয় হবে। এটা আল বুগদু ফিল্লাহ বা আল্লাহর জন্য মনোমালিন্য করার পর্যায়ে পড়বে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আল্লাহ আমাদেরকে হালাল সম্পদ দিয়ে ইবাদত করার তাওফীক দিন। আমীন।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, তড়িতভাবে উত্তরটা দেয়ার জন্য। আসলে এসব দিক বিবেচনা না করেই তার সাথে একরকম কথা দিয়ে ফেলেছিলাম, কিন্তু যখন কুরবান বিষয়ে আপনার 2009 এর লেখাটি আজকে চোখে পড়ল তখনই আমার মাথায় চিন্তাটা বাসা বাঁধে। এখন কিভাবে এড়িয়ে যাব চিন্তা করছি। আর যদি এবারের মত দেই এবং সামনের বার থেকে যেভাবে পারি বাদ দিব এই ইচ্ছা পোষণ করি তাহলে কি আমার কুরবানী আদায় হবে কি?
‘সন্দেহযুক্ত’ হবে। আপনি তাকে মোটিভেট করতে পারেন এভাবে যে, আমাদের সবার উচিৎ হালাল টাকায় কুরবানী দেয়া। যেহেতু এটা একটা বড় ইবাদাত। ইত্যাদি ইত্যাদি.. একজন লোকের তো হারামের পাশাপাশি হালাল টাকাও থাকে। সে তার হালাল উপার্জন থেকে কুরবানী দিলে তো কোনো সমস্যা থাকে না। ভালো থাকুন।
korbanir eid r “sunnot”somuh janale valo hy
ঈদুল আযহার সুন্নত ঈদুল ফিতরের মতোই। এই লিংকটি পড়ুন। শুধু দুটো বিষয় ভিন্ন।
১. ঈদগাহে যাওয়ার পথে জোরে জোরে তাকবীর বলবে।
২. নামাযের আগে কিছু খাবে না। (যারা কুরবানী দিবেন।)
এছাড়া শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির জন্য এই লিংকটি পড়ুন।
মুহতারাম মুফতী সাহেব,
আসসালামু আলাইকুম আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,
সারোগেসি নিয়ে লিখার অনুরোধ রইল।