প্রশ্ন : ইসলামে সন্তান পালক নেয়ার হুকুম কী?যদি কোন শিশুকে দত্তক নেয়া হয়,তাহলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর কি দত্তকগ্রহণকারী মায়ের সাথে দেখা করা জায়েয হবে?আশা করি,কোরআন-হাদীসের আলোকে উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।ধন্যবাদ।
উত্তর : আসসালামু আলাইকুম।
সন্তান পালক নেয়ার বা দত্তক নেয়ার কোনো শরয়ী বিধান ইসলামে নেই। অর্থাৎ কেউ কোনো শিশুকে দত্তক নিলে ইসলাম তাকে তার সন্তান হিসেবে গণ্য করে না। বরং সন্তান সবসময় তার আসল পিতার দিকেই সম্পৃক্ত হবে।
কোনো গরীব শিশুকে সাহায্য করণার্থে তাকে ভরণপোষণ করা, তাকে বাবা সম্বোধন করতে বলা একটি সৎ কাজ, নি:সন্দেহে। তবে এতে সত্যিকার অর্থেই সে তার বাবা হয়ে যায় না। দত্তক নেয়া শিশুটি তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে না। এবং পর্দার ক্ষেত্রেও তা কোনো প্রভাব ফেলবে না। অর্থাৎ শিশুটি ছেলে হলে বড় হয়ে তাকে দত্তক নেয়া মায়ের সাথে পর্দা করতে হবে। আবার মেয়ে হলে তাকে দত্তক নেয়া পিতার সাথে পর্দা করতে হবে এবং সে তাকে দত্তক নেয়া পিতার ছেলের সাথে বিবাহও করতে পারবে। কারণ শরীয়তে এ সম্পর্ক কখনোই বংশীয় সম্পর্কে পরিণত হয় না। এটা জাহেলী যুগের ধারণা ছিল।
আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে বলেন,
وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءَكُمْ أَبْنَاءَكُمْ ذَٰلِكُمْ قَوْلُكُم بِأَفْوَاهِكُمْ وَاللَّهُ يَقُولُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِي السَّبِيلَ
এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। (৩৩:৪)
হ্যাঁ, কেউ চাইলে সে তার জীবদ্দশায় তার পালক সন্তানের জন্য অসীয়ত করে যেতে পারে, এটা বরং উত্তম। এতে তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি তার পালক সন্তান পাবে।
ধন্যবাদ।
আচ্ছে এই ক্ষেত্রে দুধ মায়ের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার যে সম্ভাবনা আছে, তার আলোকে পরিবারের অন্যদের সাথে সম্পর্ক কিভাবে পরিবর্তন হতে পারে?
দুধ মায়ের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কেবল তখনই, যখন দত্তক গ্রহীতা শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোর বয়সের মধ্যে তাকে দুধ খাওয়াবে। এ অবস্থায় দুধ মা হলে পরিবারের অন্যদের সাথে আপন ভাই-বোন-সন্তানের ন্যায় আচরণ/পর্দা ইত্যাদি হবে।