ইঊসুফ সুলতান : কওমী মাদরাসার নাম শুনলেই আমাদের কল্পনায় ভেসে ওঠে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের চিত্র, যাদের বিরুদ্ধে ক’দিন পর পর রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা জঙ্গীবাদের কথা বলে থাকেন; অথচ তাদের বক্তব্যের কোনো সত্যতা খুঁজে পান না। মাথায় টুপি আর মুখে দাড়ি নিয়ে যারা নীরবে সমাজ সংস্কারের কাজ করে যান, সত্যের দিশা দিয়ে মানুষকে সৎ ও যোগ্য মানুষরূপে গড়ে তুলেন; কিন্তু সমাজের সাদা মনের মানুষদের তালিকায় তাদের নাম কখনোই ওঠে না। বেতন-ভাতা-পার্থিব সুখ যাদের কাছে মুখ্য নয়, মুখ্য কেবল ইসলাম ও মানবতা। হিংসা-স্বার্থ তাই তাদেরকে কখনো কাবু করতে পারে না। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মানব সেবায় যারা নিজেদের বিলিয়ে দেন অকাতরে।
আমাদের অনেকেরই ধারণা, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব কেবল বাংলাদেশ, ভারত আর পাকিস্তানে। অন্য কোথাও এর নজীর বুঝি খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে কওমী মাদরাসা এখন ইউরোপ-আমেরিকাতেও সদম্ভে বিরাজ করছে। তবে পার্থক্য শুধু এটুকু যে, আমরা যেটাকে কওমী মাদরাসা বলে জানি, তারা সেটাকে দেওবন্দী মাদরাসা বা দারুল উলূম বলে চিনে। ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দের নামানুসারে সেগুলোর নামও দারুল উলূম হয়ে থাকে।
আমেরিকার নিউ ইওর্কে দারুল উলূম নিউ ইওর্ক, বাফেলোতে দারুল উলূম মাদানিয়া;শিকাগোর কাছে ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন; মেরি ল্যান্ডে দারুল উলূম মেরিল্যান্ড –এসব দারুল উলূম দেওবন্দেরই প্রতিনিধিত্ব করে। এছাড়া ব্রিটেনে বার্মিংহ্যামে রয়েছে দারুল উলূম বার্মিংহ্যাম; ডিউসবারিতে দারুল উলূম ডিউসবারি; ল্যাস্টারে দারুল উলূম ল্যাস্টার, জামিয়া আল কাউসার জামিয়া উলূমুল কুরআন, জামিয়া রিয়াজুল কুরআন ও দারুল উলূম আল আরাবিয়া আল ইসলামিয়া; কিডারমিন্সটারে মাদিনাতুল উলূমিল ইসলামিয়া; এবং বোলটনে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া।
কানাডায় ওন্টারিওতে আছে আল রাশিদ ইসলামিক ইন্সটিটিউট, বোমানভ্যালেতে দারুল উলূম বোমানভ্যালে এবং মেয়েদের জন্য পৃথকভাবে আয়েশা সিদ্দীকা ইসলামিক ইন্সটিটিউট।
দক্ষিণ আফ্রকায় দেওবন্দী দারুল উলূমের ছড়াছড়ি।ক্যাম্পারডাউনে মুফতি ইবরাহীম দেসাইর তত্ত্বাবধানে আছে মাদরাসা ইনআমিয়াহ; আজাদভ্যালেতে মাদরাসা আরাবিয়া ইসলামিয়া;ইসপিঙ্গো বীচে মাদরাসা তালীমুদ্দীন; স্প্রিংগসে জামেয়া মাহমুদিয়্যাহ; স্ট্র্যান্ডে দারুল উলূম আল আরাবিয়া আল ইসলামিয়া;পোর্ট এলিজাবেথে দারুল উলূম আবু বাকার;এবং নিউ ক্যাসেলে দারুল উলূম নিউ ক্যাসেল। এছাড়া শুধু মেয়েদের জন্য রয়েছে ল্যান্সডাউনে মাদরাসা ইসলাহুল বানাত; পোর্ট এলিজাবেথে মাদরাসা বানাতুল ইসলাম; আজাদভ্যালিতে মাদরাসাতুল বানাত ও মাদরাসা মুনিরাতুল ইসলাম লিল বানাত; এবং ল্যানাসিয়াতে মাদরাসা জাকারিয়া।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ট্রিনিদাদ ও টোবাগোতে আছে দারুল উলূম ট্রিনিদাদ এ্যান্ড টোবাগো।
এছাড়া ইন্টারনেটে অনলাইনে বর্তমানে তিনটি দারুল উলূম পরিচালিত হচ্ছে। আই আই ই অনলাইন (iieonline.org), দারুল উলূম (www.darululum.org) ও শারিয়া প্রোগ্রাম (ShariahProgram.ca)। এসব সাইট থেকে ঘরে বসে অনলাইনে দেওবন্দী দারুল উলূমের শিক্ষা নেয়া যাবে।
পশ্চিমা বিশ্বে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাজুয়েট ছাত্ররা হালাল ফুড মনিটরিং, ইসলামি তাকাফুল, ইসলামি ব্যাংকিং ও জীবনের প্রতিটা স্তরে ইসলামের আহ্বান ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। সমাজের বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমেও নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখছেন সমান ভাবে।
তথ্যসূত্র: www.sunniforum.com
—————————–
জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসা কর্তৃক আয়োজিত ‘৩০ সালা দস্তারবন্দী মহাসম্মেলনে’ প্রকাশিত ব্যুলেটিন ‘উদ্দীপন’ -এ প্রকাশিত।
Vaia! Apnakey oses Sukria. Amee agey jantamna je Qowmee madrashar website asey. Khub valo holo.
Apnakeo shukria.
মুকরিয়া এই লেখাটি এখানে প্রকাশ করার জন্য। কওমী মাদরাসার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর একটি ওয়েব সাইট আছে ইচ্ছা করলে ঐখানেও শেয়ার করতে পারেন http:www.qawmee.com