কওমী মাদ্রাসার ‘দাওরায়ে হাদীস’কে মাস্টার্স সমমান প্রদান

গতকাল বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার সাধারণ কারিকুলামের সর্বোচ্চ স্তর ‘দাওরায়ে হাদীস’কে মাস্টার্স সমমান দেয়া হয়েছে। (সূত্র: https://goo.gl/WPuJJE) আমরা আশা করি এর মাধ্যমে কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা সমাজের মূল ধারায় আরো বেশি অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে এবং দ্বীনের চেতনা ছড়িয়ে দিতে পারবে ইনশা’আল্লাহ।

মালয়েশিয়ায় আমাদের সাথে এখানে দারুল উলূম দেওবন্দ, দারুল উলূম করাচী, দারুল উলূম বিন্নূরীটাউন, দারুল উলূম মুরাদাবাদ, জামিয়া রশিদিয়া ভারত ও দারুল উলূম যাকারিয়ার ছাত্ররা আছেন। তাদের প্রত্যেকেরই সনদের ন্যূনতম মান সরকারীভাবে স্বীকৃত, ফলে বিভিন্ন উচ্চতর পড়াশোনা ও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করা সহজ। এ দিক দিয়ে বাংলাদেশের আলিমরা মজলুম ছিলেন। ফলে খিদমতের অনেক দিক রুদ্ধ ছিল।

আমরা আশা করি, সরকারের এ ঘোষণা দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে; এবং উলামায়ে কিরামের পক্ষ থেকেও সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আমরা আরো আশাবাদী যে, এর মাধ্যমে উলামায়ে কিরাম সমাজের বিভিন্ন স্তরে অবদান রাখার সুযোগ পাবেন ইনশা’আল্লাহ।

একটি সমাজ ব্যবস্থা টিকে থাকার জন্য যেসব গুনাগুণ প্রয়োজন – সততা, জবাবদিহিতা, নৈতিকতা, মানবতা, দুর্নীতিমুক্ত থাকা- মোটকথা সামাজিক-অর্থনৈতিক ইনসাফ প্রতিষ্ঠা – যা ইসলামের একেবারে মৌলিক নৈতিক নীতিমালাগুলোর একটি – সমাজ থেকে সেগুলো প্রায় উঠেই গেছে বলা যায়। ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিতদের এক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখার আছে।

মসজিদের মিম্বরে সততা ও জবাবদিহিতার কথা বলা, এবং বাস্তবে সততা ও জবাবদিহিতার সাথে নেতৃত্ব দেয়া ভিন্ন বিষয়। সময় হয়েছে উলামায়ে কিরামের বাস্তব পরিমণ্ডলে নেতৃত্ব দেয়ার। শিক্ষা, চিকিৎসা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, আইন-আদালতের প্রতিষ্ঠান – সবই আজ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে মৃতপ্রায়। এসব সেক্টরে সৎ, যোগ্য ও আমানতদার নেতৃত্বের বড় অভাব। আমরা আশাবাদী, মাদ্রাসা যেভাবে ইসলামী স্কলার বা আলিম তৈরি করেছে এবং করবে, একই সাথে মাদ্রাসা এখন অন্য অনেক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ব্রিজিং বা সেতুবন্ধনের কাজ করবে ইনশা’আল্লাহ। ফলে প্রতিটি মুসলিম বাবা-মাই তাদের সন্তানকে কওমী মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানে উৎসাহিত হবেন। পরবর্তীতে অন্য বিষয়ে বিশেষায়িত পড়াশোনায় অংশ নেয়াবেন।

আমরা আশাবাদী যে আমরা এমন একটি প্রজন্ম পাব, যারা একই সাথে হাফেজ ও ডাক্তার, হাফেজ ও উকিল, হাফেজ ও গণিতের শিক্ষক, হাফেজ ও ইঞ্জিনিয়ার। আল-কুরআন তাদের সকল কর্মকাণ্ডকে পরিচালিত করবে ইনশা’আল্লাহ।