ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল চলে গেলেন

ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. ছিলেন সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে আমাদের দেশে যে প্রান্তিকতা চলছে, সুনির্দিষ্ট ও অনির্দিষ্ট ফিকহ অবলম্বনকারীদের মাঝে, তা তিনি দূরীকরণে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। ইন্টারনেট ও ডিশের প্রভাবে উন্মুক্ত পৃথিবীতে যে একই সমাজে নানা ফিকহের সম্মিলন শুরু হয়েছে, তা মোকাবিলায় তার ভূমিকা ছিল অনুকরণীয়। এছাড়া খৃষ্টান মিশনারিদের অপতৎপরতা রুখতে তাঁর ভূমিকা, বিদআত বিরোধী অবস্থান – সব মিলিয়ে তিনি উঠেছিলেন অনন্য উচ্চতায়। মোটামুটি সর্ব-মহলে তিনি ছিলেন সমাদৃত, শ্রদ্ধেয়।

আমার ক্ষুদ্র মিডিয়া জীবনে প্রতিষ্ঠিত অনেকের সাথেই প্রোগ্রাম করার সুযোগ হয়েছে। অনেকেই বিতরের নামায কত রাকাত, বা আমীন জোরে বলবে না আস্তে – এসব প্রশ্নের উত্তরে প্রান্তিকতার আশ্রয় নেন, অন্য সব মতামতকে সহজেই সুন্নাহবিরোধী ঘোষণা দিয়ে দেন, এবং উম্মাহর একটি বৃহৎ অংশকে – যেখানে অনেক বড় সাহাবীও রা. আছেন – প্রকারান্তরে বিদআতী বলতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। কিন্তু ডক্টর সাহেব ছিলেন ভিন্ন। তাঁর আলোচনায় মানুষ উভয় মতের প্রতি শ্রদ্ধা জেনেছে, সহনশীলতা শিখেছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ মিরপুর দারুস সালামে তিনি “আল্লাহর পথে দাওয়াহর বাধাসমূহ ও সেগুলো দূর করার উপায় (معوقات الدعوة إلى الله و كيفية معالجتها)” শীর্ষক আলোচনাসভার আয়োজন করেন, যেখানে উপস্থিত থাকেন মিডিয়ায় প্রতিষ্ঠিত ইসলামী আলোচকবৃন্দ ও আরো উলামায়ে কিরাম। তাঁর স্বপ্ন ছিল, এ বিষয়ে আরো সিরিজ মতবিনিময়ের আয়োজন করবেন। কিন্তু দেশের ক্রমবর্ধমান সমস্যার কারণে আর পারেন নি। (এ বিষয়ে সে সময় পোস্ট দিয়েছিলাম: https://www.facebook.com/myousufs/posts/10201956544943497) গত বছর আরেকটি পোস্টে সে উদ্যোগটির ধারাবাহিকতার স্বপ্ন নিয়ে পোস্ট দেই: (https://www.facebook.com/myousufs/posts/10206349719130106)। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না।

উম্মাহর এ ক্রান্তিলগ্নে তাঁর মতো আলেমের কাছে সমাজের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের ফয়সালা, সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল চলে গেলেন তিনি।

আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে জায়গা করে দিন। তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর সম্প্রীতির ঝাণ্ডা হাতে অন্য কোনো উম্মাহ দরদীকে কাজে লাগিয়ে দিন। আমীন।