নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে

জীবনের গতিটাকে যদি পেনসিলের খোঁচায় আঁকতে হয়, তাহলে নিশ্চয় হৃত্স্পন্দনের উঁচু-নিচু রেখার মতোই হবে; কখনো ওপরে, কখনো নীচে, কখনো বা সমতলে চলতে থাকে জীবন-স্পন্দন। কখনো হাসি, কখনো কান্না। কখনো আশা, কখনো নিরাশা। কখনো ‘উসর, কখনো ইউসর।

إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। (আল-কুরআন, ৯৪:৬)

তবে উভয় অবস্থাই মুমিনের জন্য কল্যাণকর।

عَنْ صُهَيْبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : “عَجَبًا لأَمْرِ الْمُؤْمِنِ إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ وَلَيْسَ ذَاكَ لأَحَدٍ إِلاَّ لِلْمُؤْمِنِ إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ صَبَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ”.

সুহাইব রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সা. বলেছেন, “মুমিনের ব্যাপারটা বেশ দারুণ, তার সবকিছুই মঙ্গলজনক। এবং এমনটা মুমিন ছাড়া অন্য কারো ক্ষেত্রে হয় না। সে সুখে থাকলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, ফলে সেটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আবার সে দুখে থাকলে ধৈর্যধারণ করে, ফলে সেটাও তার জন্য ভালো হয়ে থাকে।” (সহীহ মুসলিম: ২৯৯৯)

অন্যভাবে বললে, মুমিন দুখে-কষ্টে থাকলে নিজের অক্ষমতা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে। সে বুঝে নেয় যে, সে চূড়ান্তভাবে অক্ষম, এবং সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। কাজেই হা-হুতাশ না করে ধৈর্য ধরে তাঁরই দরবারে ভিক্ষার ঝুলি এগিয়ে দিতে হবে; তাঁরই কাছে রহমতের আশা করতে হবে। ফলে তাঁর এ সবর ও রোনাজারি তাঁর জন্য মঙ্গলজনকই হয়।

ওদিকে সুখে থাকলেও সে বুঝে নেয়, এই সুখ দেয়ার মালিক কেবল একজনই, তিনি হলেন আল্লাহ তায়ালা। সুখ অর্জনের ক্ষমতা ব্যক্তির নিজের নেই। কোনো মানুষ বা সৃষ্টির পক্ষে সুখ এনে দেয়া কখনো সম্ভব নয়। কাজেই সকল কৃতিত্ব একমাত্র আল্লাহর, সকল প্রশংসা তাঁর, সকল কৃতজ্ঞতা তাঁর জন্যই। ফলে তার এ কৃতজ্ঞতা তার জন্য ভালোই হয়।

لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (আল-কুরআন, ১৪:৭)

সুখ আর দুখের অনুভূতিগুলোর মাঝে সবর ও শোকরের ভারসাম্য রক্ষা করে সতর্কতার সাথে চলাই সাফল্যের উপায়। আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করুন। আমীন।