শ্রেণী বৈষম্য ও শান্তির অপেক্ষা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেরাইদেরচালা এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার একটি পোশাক কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত হন নয়জন। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নিন।

খবরটি গতকালের হলেও পত্রিকাগুলোতে খুঁজে পেতে একটু বেগ পেতে হবে। পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু -সবাই যেন এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

একই দিনে গত পরশু চট্টগ্রামের মাদ্রাসায় সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া আরেক ছাত্র নিহত হন। আমরা তাদের জন্যও দোয়া করি। এ নিয়ে সেদিনের অগ্নিকাণ্ডে দুজন নিহত হন। আল্লাহ তাদেরকেও শহীদ হিসেবে কবুল করে নিন।

দুই অগ্নিকাণ্ডে যথেষ্ট মিল আছে। উভয় ক্ষেত্রে ভিকটিমরা অবেহলিত। একটি ঘটনায় সমাজের অবহেলিত শ্রেণী “পোশাক কারখানার শ্রমিক শ্রেণী” হওয়ায়। অপরটি আরেক অবহেলিত শ্রেণী “কওমী মাদ্রাসার ছাত্র” হওয়ায়।

আবার দুটো ঘটনায় বড় অমিলও আছে। একটিতে অগ্নিকাণ্ড ও মৃত্যু স্বাভাবিক। সংখ্যাটা পঞ্চাশ-একশ পার না করলে তেমন আলোচনা হয় না। আরেকটিতে খুবই অস্বাভাবিক। সংখ্যা যা-ই হোক, জঙ্গিবাদের তকমা লেগে যায়।

সমাজে শ্রেণী বৈষম্য যত প্রকট হবে, শান্তি ততই রূপকথার গল্পে পরিণত হবে। ইসলাম শ্রেণী বৈষম্য কঠোরভাবে ঘৃণা করে ও নিষিদ্ধ করে। মানুষ হিসেবে একের ওপর অপরের মর্যাদা পাওয়ার একমাত্র ক্রাইটেরিয়া ইসলামে “তাকওয়া”। কিন্তু তাকওয়া যেহেতু সুপ্ত বিষয়, তাই বাস্তবে মানুষ সবাই সমান।

সমাজের কোনো একজনেরও ঈমান, প্রাণ, মেধা-বুদ্ধি, বংশ, সম্মান ও সম্পদের ওপর আঘাত আসলে সমাজ পরিচলাকরা তাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন। প্রয়োজনে শাস্তির মুখোমুখি হবেন। কারণ ইসলামে এই ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিই মানুষের মৌলিক অধিকার।

“হে আল্লাহ! আমরা আপনাকে রাব হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট, মুহাম্মাদ স. কে রাসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট, আল-কুরআনকে কিতাব হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট। আপনিও আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান। আমীন।”