ফতোয়াবাজী নাকি সালিসবাজী?

প্রথম আলো ব্লগে একটি পোষ্টে আলোচনাপ্রসঙ্গে নিচের মন্তব্যটি করি।

“এ রকম শাস্তি কার্যকর করার ও মামলা পরিচালনা করার ক্ষমতা একমাত্র ইসলামিক প্রশাসনের। যদি রাষ্ট্রে ইসলামিক আইন না থাকে, কিংবা সেই আইন বাস্তবায়নের ক্ষমতা কাউকে না দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সে যত বড় মাওলানাই হোক না কেন, তা কার্যকর করতে পারবে না। বরং তা কার্যকর করতে লাগবে ইসলামিক কোর্ট/ ইসলামিক আইনজীবী/ সরকারের অনুমতি ইত্যাদি।
অতএব এ কার্যকর করার ব্যাপারটাও ইসলাম বিরোধী হলো।

তাহলে প্রশ্ন, দোষটা কার? যে ক্ষমতা তাকে দেওয়াই হয় নি, সে ক্ষমতা কার্যকর করার ক্ষমতা সে পেল কোথা থেকে? অনেক ক্ষেত্রে শোনা যায়, ছেলে পক্ষ ছেলেকে বাঁচাতে এসব মাওলানাদের দিয়ে উল্টা-পাল্টা ফতোয়া লিখিয়ে নিয়ে যান। যেন ছেলেকে বাঁচিয়ে বেচারী মেয়েটাকে ফাসানো যায়। হয়তো অনেক জায়গায় টাকা-ছোড়াছোড়িও হয়। ঘটনার পেছনের ঘটনা কে জানে! এমতাবস্থায় এলাকার সেসব গণ্যমাণ্য পন্ডিতরাও কি সমান অপরাধী নয়।

দেশের বড় বড় মুফতিরা কখনো এরকম উল্টা-পাল্টা ফতোয়া দেন না। ফতোয়া দেওয়ার সঠিক যোগ্যতা থাকলে কেউ ওই গাঁয়ে পড়ে থাকত না নিশ্চয়। ইসলামিক জুরিস্প্রুডেন্সের ও ল’ -এর জন্য যে যোগ্যতার প্রয়োজন, সেসব কি এসব মাওলানাদের মধ্যে আছে? আরে! ইসলামই তো তাদের ফতোয়া দেওয়ার ক্ষমতা দেয় নি, তারা সে ক্ষমতা পেল কোথা থেকে?

পরিশেষে কথা হলো, অবৈধ সম্পর্ক ও অবৈধ মেলামেশা সব ধর্মই অস্বীকার করে। মানুষের স্বাভাবিক বিবেকও তা মেনে নেয় না। মানুষ আর অন্যান্য পশুর মধ্যে অন্যতম পার্থক্য এটি। অতএব জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবারই এসব কাজ পরিত্যাগ করা উচিৎ। পবিত্র জীবন যাপনের সুখই আলাদা।

আর সমাজের এসব পন্ডিত শ্রেণীর বিরুদ্ধে সবারই এগিয়ে আসা উচিৎ। আল্লাহ সকলকে সঠিক পথের দিশা দিন। আমীন।”