গান-বাদ্যকে না, কুরআন তেলাওয়াতকে হ্যাঁ

বেশির ভাগ গান মানুষকে কেবল হতাশা আর নিরাশাই উপহার দেয়। অপর দিকে কুরআন ও হামদ-নাত মানুষের ভেতরটাকে আলোকিত করে তাকে দেয় এক অনাবীল প্রশান্তি। কুরআনের অর্থ যদি বুঝেন তা হলে তার ক্বিরাত যে এত বেশি মজা দিবে আপনাকে… তা বুঝিয়ে বলার নয়। মনে হবে স্রষ্টার কথা সরাসরি শুনছেন আপনি। অবশ্য অর্থ না বুঝলেও কুরআনের মজা থেকে বঞ্চিত হবেন না, এটাই কুরআনের মুজিযা বা অলৌকিকতা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন “একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।“ (সূরা লোকমান:৬)

আলোচ্য আয়াতে لهو الحديث –এর সম্পর্কে তাফসীরবিদগণের উক্তি বিভিন্নরূপ। আয়াতটির শানে নুযূলে দেখা যায় যে, মক্কার এক মুশরিক বণিক মানুষকে কোরআন শুনা থেকে দূরে সরানোর জন্য পরদেশ থেকে রাজা বাদশার কল্পকাহিনীর বই আর গায়িকা ক্রয় করে নিয়ে আসে। সেসব কাহিনী আর গান শুনিয়ে সে মানুষকে কুরআন বিমুখ করার চেষ্টা করে। তখন আল্লাহ তায়ালা উপরোক্ত আয়াতটি নাজিল করেন। তাই অধিকাংশ তাফসীরবিদই لهو الحديث এর অর্থ গান বাদ্য করেছেন। নিম্নে তাদের কয়েকটি উল্লেখ করা যাচ্ছে।

১. হযরত ইবনে মাসঊদ, ইবনে আব্বাস ও জাবের (রা:)-এর এক রেওয়ায়েতে তাফসীর করা হয়েছে: গান-বাদ্য করা। (হাকেম, বায়হাকী)
২. অধিকাংশ সাহাবী, তাবেয়ী ও তাফসীরগণের মতে গান, বাদ্যযন্ত্র ও অনর্থক কিসসা-কাহিনীসহ যেসব বস্তু মানুষকে আল্লাহর এবাদত ও স্মরণ থেকে গাফেল করে, সেগুলো সবই لهو الحديث
৩. গান ও তদনুরূপ অন্যান্য বিষয় (যা আল্লাহর এবাদত থেকে গাফেল করে দেয়)। বুখারী ও বায়হাকী স্ব স্ব কিতাবে এ তাফসীরই অবলম্বন করেছেন। (উপরোক্ত ব্যাখ্যাটুকু মা’আরেফুল করুআন থেকে সংক্ষেপিত)

এ আয়াতের উপর ভিত্তি করে ফকীহগণ অহেতুক ক্রীড়া-কৌতুক, গান-বাদ্য, অশ্লীল গল্প-উপন্যাস ইত্যাদি আরো অনেক কিছু নিষেধ করেছেন। তবে শানে নুযূলে গায়িকা ক্রয় করার বিষয়টি থাকায় গান-বাদ্য শোনা এবং ক্রয়-বিক্রয় করা সর্বাগ্রে এ আয়াত থেকে নিষিদ্ধ প্রমাণিত হয়। আল্লাহ আমাদের এসব থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

নিম্নে একটি লিংক দিচ্ছি। এখান থেকে কিশোর আহমাদ সাঊদের তেলাওয়াত শুনে দেখবেন। আশা করি খুব ভালো লাগবে।

http://mp3quran.net/eng/saud_english.html

মানুষের মন সুরের প্রতি দুর্বল। বিখ্যাত ক্বারীদের ক্বিরাত সেই দুর্বলতা মেটাতে পারে। একই সাথে কুরআন তেলাওয়াত শ্রবণে রয়েছে সওয়াব ও প্রশান্তি। আল্লাহ আমাদেরকে গান-বাদ্য বাদ দিয়ে কুরআনের সুমধুর তেলাওয়াত শ্রবণের অভ্যাস গড়ে তোলার তাওফীক দিন।